Monday 19 April 2021

“শিক্ষা শিক্ষককেও পথ দেখায়”

 মা সন্তান জন্ম দেয় কিন্তু শিক্ষা দেয় শিক্ষক। একাডেমিক শিক্ষা ছাড়াও পথেঘাটে বেসামাল শিশুদের সুপথ দেখিয়ে দেয়, গল্প নয় সত্যি। এক শিক্ষক একদিন কোন এক চায়ের দোকানে বসে চা পান করছিল। শিক্ষক দেখতে পেল একটু দূরে /১০ বছরের দুটি শিশু একে অপরের সাথে ঝগড়া করতেছে। প্রথমে দুই শিশুর মধ্যে সামান্য কথার কাটাকাটি শুরু হয়, এক পর্যায়ে ঝগড়া মারাত্মক আকার ধারণ করে। শিশু দুটি একে অপরকে অশ্লীল ভাষায় গালি দিতে থাকে। এমনকি একে অপরের পরিবার, পিতামাতা সম্পর্কে সত্য মিথ্যা মিশিয়ে অরুচিপূর্ণ কথা বলতে থাকে।

চায়ের দোকানে বসে শিক্ষক শিশুদের এহেন কান্ড-কারখানা প্রথম থেকেই দেখছেন। তিনি আর বসে থাকতে পারলেন না, চায়ের দোকান থেকে উঠে গিয়ে শিশু দুটিকে আদর করে মিষ্টি কথা বলে ঝগড়া থামিয়ে দিলেন। এরপর শিশু দুটির হাত ধরে তার সাথে যেতে বলেন। শিশু দুটি প্রথমে ভয় পেলেও শিক্ষকের আচরণে তার সাথে যেতে রাজি হয়। শিক্ষক শিশু দুটিকে একটি পুকুরের ধারে নিয়ে যায়। পুকুরের পানি তখন একদম শান্ত অবস্থায় ছিল এবং পানি ছিল স্বচ্ছ। শিশু দুটিকে পুকুরটি দেখিয়ে বলল- এখানে কি দেখতে পাচ্ছ? উত্তরে শিশু দুটি বলে পানি। আর কি দেখছ শিক্ষক জানতে চাইলে শিশু দুটি বলে পানি খুব পরিষ্কার, কিন্তু নিচে ময়লা জমে আছে। শিক্ষক শিশু দুটিকে বুঝাতে চায় পরিষ্কারের মধ্যেও ময়লা থাকে। এরপর শিক্ষক জানতে চায় উপরের এই পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ধোঁয়া যাবে কিনা, উত্তরে শিশু দুটি হ্যাঁ বলে। তিনি খুব সাবধানে পুকুরের পানি হাতে নিয়ে শিশু দুটিকে দেখালেন, সেখানে কোন ময়লা ছিল না। এবার শিক্ষক একটি লাঠি একজনের হাতে দেন আর পুকুরের পানিতে নাড়াচাড়া করতে বলেন। এবার শিক্ষক শিশু দুটির কাছে জানতে চায়, তারা কি দেখতে পাচ্ছে। তারা বলে পানি নোংরা হয়ে গেছে। শিক্ষক জানতে চান পানি দিয়ে মুখ ধোঁয়া যাবে কিনা। তারা বলে না, তাহলে মুখও নোংরা হয়ে যাবে। এবার শিক্ষক শিশু দুটিকে বলেন, যদি পরিষ্কার পানি লাঠি দিয়ে নাড়াচাড়া করে তাহলে পরিষ্কার পানিও ময়লা হয়ে যায়। পরিষ্কার পানি পান করা, মুখ ধৌত করা বা গোসল করা যায় কিন্তু ময়লা পানি ব্যবহার অযোগ্য।

 শিক্ষক শিশু দুটিকে বুঝাতে চেষ্টা করল একটি পুকুরের পানি দিয়ে। পৃথিবীতে মানুষের দোষও আছে আবার গুণও আছে। আমরা যদি দোষ না দেখে গুণ গুলোকে দেখি তাহলে তা পানির প্রথম অবস্থার মতই স্বচ্ছ থাকবে এবং পরস্পরের প্রতি ভালবাসা জন্মাবে। ভালো-খারাপ দিয়েই পৃথিবীর সকল কিছু সৃষ্টি, আমরা ভালোকে গ্রহণ করি খারাপকে বর্জন করি কারণ অপরের দোষ-ত্রূটি ঘাটতে গেলে তা নিজের গায়েই লাগে। একে অপরের সাথে ঝগড়া নয়, অশ্লীল ভাষা ব্যবহার নয় একে অপরের দিকে সহমর্মিতার হাত বাড়িয়ে দেয়ার নামও শিক্ষা। শিশু দুটি তাদের নিজেদের ভুল বুঝতে পারে। শিক্ষক এভাবে পথশিশুদের নোংরা পথ থেকে ফিরিয়ে সুন্দর পথে নিয়ে আসেন। তাই একজন শিক্ষক সকলের কাছে মর্যাদা পায়, শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নয় সর্বক্ষেত্রে শিক্ষকের মর্যাদা রয়েছে। 

                                                                        লেখক- সুমন শিকারী

বেস্ট ফ্রেন্ড যখন বউ (পর্ব- ১-৩)

দেখতে দেখতে আমার বিয়ের দিন চলে আসলো। এমনকি বিয়েও হয়ে গেছে। আমি এখন বাসর ঘরে ঢুকে দেখি জান্নাত খাটের উপর বসে মাথার আঁচল ফেলে হাত পাখা দিয়...